আক্রান্ত প্যারিস। জরুরি অবস্থা ঘোষণা, সীমান্ত বন্ধ, আইএসের দায় স্বীকার।
রক্তস্নাত
প্যারিস। আক্রান্ত
প্যারিস।
দ্বিতীয়
বিশ্বযুদ্ধের পর প্যারিসে এমন
ভয়াল রাত আর কখনও
আসেনি। ফ্রান্সের
রাজধানী শহরটি দুনিয়াব্যাপী পরিচিত
ছবি আর কবিতার শহর
হিসেবেই। শুক্রবার
রাতটি অন্যান্য দিনের মতোই শুরু
করেছিলেন নগরের বাসিন্দারা।
তবে মুহূর্তের মধ্যে তাদের জীবনে
নেমে আসে বিভীষিকা।
ভয়ঙ্কর এক সন্ত্রাসী হামলার
শিকার হন তারা।
একের পর এক বিস্ফোরণ
আর গুলিতে প্যারিস পরিণত
হয় এক মৃত্যুপুরীতে।
সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত
এ হামলায় নিহত হয়েছেন
কমপক্ষে ১২৮ জন।
আহত হয়েছেন কয়েক শ। আট
হামলাকারীও নিহত হয়েছে।
তাদের মধ্যে সাত জন
মারা যায় আত্মঘাতী বিস্ফোরণে। একজন
নিহত হয় পুলিশের গুলিতে। এ
হত্যাযজ্ঞের পর ফ্রান্সজুড়ে জারি
করা হয়েছে জরুরি অবস্থা। কর্তৃপক্ষ
স্থানীয় অধিবাসীদের ঘরের বাইরে বের
হতে নিষেধ করেছে।
আশেপাশের এলাকার স্কুলগুলো বন্ধ
করে দেয়া হয়েছে।
মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত
সেনা। এ
হামলার দায় স্বীকার করেছে
ইসলামিক স্টেট (আইএস)।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদেও এ হামলার জন্য
আইএসকে দায়ী করেছেন।
এ হামলায় নিন্দার ঝড়
উঠেছে সারা দুনিয়াতে।
পৃথিবীর প্রায় সব দেশ
থেকেই হামলার প্রতিবাদ জানানো
হয়েছে। নাইন
ইলেভেনের হামলার পর এ
হামলাকেই ইউরোপে সবচেয়ে বড়
সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে বিবেচনা
করা হচ্ছে। আর
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এটাই প্যারিসে
সবচেয়ে ভয়াবহ আক্রমণ।
স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে
৮টা নাগাদ প্রথম হামলাটি
হয় স্ট্যাডে ডি স্টেডিয়ামের বাইরে। সেখানে
তখন ফ্রান্স-জার্মানি প্রদর্শনী ফুটবল ম্যাচ চলছিল। স্টেডিয়ামে
হাজির ছিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট
ফ্র্যাঁসোয়া ওঁলাদে। কড়া
নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাকে
স্টেডিয়াম থেকে বের করে
নেয়া হয়। একের
পর এক হামলা শুরু
হয় প্যারিসের বিভিন্ন প্রান্তে। সবচেয়ে
বড় হামলাটি হয়েছে বাতাক্লাঁ কনসার্ট
হলে। স্লোগান
তুলে ভিড়ে ঠাসা হলে
ঢুকে পড়ে আত্মঘাতী বাহিনী। শুরুতেই
শতাধিক দর্শককে পণবন্দি করে নেয় সন্ত্রাসীরা। প্রত্যক্ষদর্শীদের
মতে, পণবন্দিদের অনেককেই সন্ত্রাসীরা একে একে গুলি
করে মারছিল। এরপর
সেনা অভিযান শুরু হতেই
একের পর এক আত্মঘাতী
বিস্ফোরণ ঘটাতে থাকে সন্ত্রাসীরা। কনসার্ট
হলে হামলাতেই শ’খানেক ব্যক্তির
মৃত্যু হয়। একই
সময় আলাদা আলাদা হামলা
চলতে থাকে পানশালা, রেস্তরাঁ,
শপিং সেন্টারে। মোট
ছয় জায়গায় হামলা চালিয়েছে
সন্ত্রাসীরা। সন্ত্রাসীদের
নৃশংস হত্যাযজ্ঞের পর ফ্রান্সজুড়ে বিরাজ
করছে আতঙ্ক। শোকে
মুহ্যমান জনতা। আক্রান্ত
প্যারিসে দম বন্ধকরা এক
পরিবেশ। রাস্তাগুলোতে
এখন ভয় আর শঙ্কা। চারদিকে
শ্বাসরুদ্ধকর এক অবস্থা।
হামলার খবরে ফ্রান্সের মানুষ
যেন হিম হয়ে গেছে। ঘরের
বাইরে পা পড়ছে না। শুধু
কয়েকটি শব্দ উচ্চারিত হচ্ছে। এর
মধ্যে রয়েছে ‘হরর’ ‘ম্যাসাকার’
আর ‘ওয়ার’। টেলিভিশন
খুললেই চোখের সামনে ভেসে
উঠছে ভয়াবহ রক্তাক্ত একটি
রাতের বিভীষিকা। তা
দেখে গা শিউরে উঠছে
প্যারিস, তথা ফ্রান্সের মানুষের। ১০
মাস আগে জানুয়ারিতে শার্লি
হেবদোতে সন্ত্রাসী হামলায় বিপর্যস্ত হয়েছিল
প্যারিস। এবারে
আবারও সন্ত্রাসের ভয়াল থাবা আঘাত
হেনেছে শহরটিতে। ফরাসি
সংবাদিক অ্যান শার্লোট হিনেট
সিএনএনকে বলেন, এ মুহূর্তে
প্যারিস একপ্রকার অবরুদ্ধ। ফ্রান্স
রেডিওর ডেপুটি এডিটর গ্রেগরি
ফিলিপস বলেন, প্যারিসের পরিস্থিতি
খুবই থমথমে। মানুষজন
আতঙ্কিত। হামলার
সময় বা এর পরে
যারা নিজ বাড়ি থেকে
দূরে ছিলেন তারা স্থানীয়
দোকানপাট বা বন্ধু-স্বজনদের
বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নানা পোস্টে দেখা
গেছে অপরিচিত ব্যক্তিরাও বাইরে আটকে পড়া
মানুষদের আশ্রয় দিচ্ছেন।
সবমিলিয়ে বিরাজ করছে, আতঙ্ক,
বেদনা আর শোকের আবহ। নির্মম
সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানিয়ে
দেশটির প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন,
এসব হামলার জবাবও হবে
নির্মম (রুথলেস)। এ
হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র প্রয়োজনে
ফ্রান্সকে সহায়তা দেয়ার প্রস্তাব
দিয়েছে। হামলার
সময় বাতাক্লাঁ কনসার্ট হলে উপস্থিত ছিলেন
পিয়ারস নামে এক ব্যক্তি। তিনি
বলেন, যাতে গুলি না
লাগে সেজন্য আমরা মেঝেতে
শুয়ে পড়ি। তখন
শ্বাসরুদ্ধকর এক অবস্থা।
সন্ত্রাসীরা আমাদের দিকে গুলি
চালায় ১০ থেকে ১৫
মিনিট। এর
মধ্যেই কনসার্ট হল পরিণত হয়
রক্তস্রোতে। এর
ভেতরে ফরাসি সেনারা প্রবেশ
করার আগেই সন্ত্রাসীরা জিম্মি
করে অনেককে। পুলিশ
গিয়ে সেখান থেকে উদ্ধার
করেছে প্রায় ১০০ মানুষকে। এখানে
অভিযানে অংশ নেয়া সন্ত্রাসীদের
মধ্যে তিনজনের পরনে ছিল বিস্ফোরকে
তৈরি বেল্ট। প্রসিকিউটরের
মুখপাত্র অ্যাগনেস থিবাল্ট-লেসুইভরে বলেন, প্যারিস ও
পার্শ্ববর্তী ছয়টি স্থানে হামলার
সময় আটজন সন্ত্রাসী আত্মঘাতী
হামলায় নিহত হয়েছে।
তবে তারা বলতে পারেন
নি যে, সব সন্ত্রাসীই
নিহত হয়েছে কিনা।
এছাড়া, অপারেশনে মোট কি পরিমাণ
সন্ত্রাসী অংশ নিয়েছিল তাও
তারা আন্দাজ করতে পারছেন
না। লি
পেটিট ক্যামবোজ রেস্তরাঁয় সন্ত্রাসীরা হত্যা করেছে কমপক্ষে
১৪ জনকে। এছাড়া,
প্যারিসের ১০ম জেলায় অন্য
একটি ক্যাম্বোডিয়ান রেস্তরাঁয় হামলায় নিহত হয়েছেন
চারজন। এভিনিউ
দি লা রিপাবলিকে সন্ত্রাসী
হামলায় নিহত হয়েছেন চারজন। লা
বেলে ইপুইপে বারের বাইরে
হত্যা করা হয়েছে ১৯
জনকে। ফ্রান্স
রেডিও’র উপ-সম্পাদক
গ্রেগরি ফিলিপস বলেছেন, প্যারিসের
অবস্থা এখন ভীষণ উত্তেজনাকর। লোকজন
ঘরের বাইরে যাচ্ছে না। এখনও
হামলাকারীদের কেউ কেউ বাইরে
রয়েছে কিনা তা নিশ্চিত
করে বলা যাচ্ছে না। এসব
হামলায় স্তব্ধ বিশ্ব বিবেক। ফরাসি
প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদে কঠোর হুঁশিয়ারি
উচ্চারণ করেছেন। তিনি
বলেন, আমরা এ লড়াই
চালিয়ে যাবো এবং তা
হবে নির্মম। যুক্তরাষ্ট্রের
প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এ
হামলায় শোক প্রকাশ করে
ফোন করেছেন ওঁলাদেকে।
এ সময় তিনি সহযোগিতার
প্রস্তাব দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই ও
হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। যুক্তরাষ্ট্রের
কর্মকর্তারা বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে
এখনও কোন বিশ্বাসযোগ্য বা
বিশেষ কোন হুমকি নেই। পরে
হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে
বলা হয়, ওঁলাদে ও
ওবামা দু’নেতা একত্রে
বাকি বিশ্বকে সঙ্গে নিয়ে কাজ
করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মারকেল বলেছেন, হামলাকারীরা
স্বাধীনতায় ঘৃণা করে।
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তার দেশ
সমর্থন দেবে। এ
হামলার পর পৃথিবীর বিভিন্ন
দেশে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
দায় স্বীকার আইএস-এর, ফের
হুমকি
প্রকাশিত
এক ভিডিওতে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার
দায় স্বীকার করেছে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস। জঙ্গি
কর্মকাণ্ডের ওপর নজরদারিমূলক প্রতিষ্ঠান
সাইট (এসআইটিই) ইন্টিলিজেন্স গ্রুপ আইএস-এর
দায় স্বীকারের কথা উল্লেখ করেছে। এর
পরিচালক রিটা কাটজ তার
টুইটারে বলেন, ফরাসি ও
আরবি ভাষায় লেখা বিবৃতিতে
দায় স্বীকার করেছে আইএস।
ওদিকে গতকালই আইএস একটি
ভিডিও বার্তা প্রকাশ করে
ফ্রান্সে আরও হামলা চালানোর
হুমকি দিয়েছে। তারা
বলেছে, যদি তাদের যোদ্ধাদের
ওপর ফ্রান্স বোমা হামলা অব্যাহত
রাখে তাহলে তারা ফ্রান্সে
আরও হামলা চালাবে।
এসব খবর প্রকাশিত হয়েছে
আল-জাজিরা, বার্তা সংস্থা রয়টার্সসহ
বিভিন্ন মাধ্যমে। প্যারিসে
ভয়াবহ বোমা হামলার পরদিনই
আইএস’র বৈদেশিক মিডিয়া
শাখা আল হায়াত মিডিয়া
সেন্টার ওই হুমকি দেয়। এতে
তারা ফরাসি মুসলমানদের হামলা
চালানোর আহ্বান জানায়।
ওই ভিডিওতে শশ্রূমণ্ডিত আরবিভাষী এক জঙ্গি বলতে
থাকে, যতদিন তোমরা বোমা
হামলা চালানো অব্যাহত রাখবে
ততদিন তোমরা শান্তিতে বসবাস
করতে পারবে না।
এমনকি তোমরা বাজারে যেতেও
আতঙ্কিত হবে।
বিশ্ব
নেতাদের নিন্দা
ফ্রান্সের
প্যারিসে ভয়াবহ সিরিজ বোমা
হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন
বিশ্ব নেতারা। মার্কিন
প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এসব
হামলাকে নিরপরাধ সাধারণ মানুষের মধ্যে
ত্রাস সৃষ্টির গর্হিত প্রচেষ্টা বলে
আখ্যা দেন। দোষীদের
বিচারের আওতায় আনতে প্রয়োজনীয়
সবকিছু করার প্রতিশ্রুতিও দেন
ওবামা। এ
হামলাকে পুরো মানবতার ওপর
হামলা বলে আখ্যা দেন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট। হোয়াইট
হাউসে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন
তিনি। মার্কিন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির বক্তব্যেও
একই কথা প্রতিধ্বনিত হয়। কেরি
আরও বলেন, ফরাসি সরকারের
যত ধরনের সহায়তা প্রয়োজন
তা দিতে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র। জাতিসংঘের
মহাসচিব বান-কি মুন
প্যারিসের ‘অত্যন্ত গর্হিত সন্ত্রাসী হামলাগুলোর’
নিন্দা জানান। হামলাগুলোকে
‘বর্বর এবং কাপুরোষিত’ আখ্যা
দিয়ে নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘের
নিরাপত্তা পরিষদ। জার্মানির
চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল বলেছেন, প্যারিস থেকে সেসব খবর
আর ছবি আমাদের কাছে
আসছে তাতে আমরা গভীরভাবে
দুঃখভারাক্রান্ত। এক
বিবৃতিতে তিনি হামলায় ভুক্তভোগীদের
প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেন,
প্যারিস হামলায় তিনি ‘স্তব্ধ’। এক
টুইট বার্তায় ক্যামেরন বলেন, ফরাসি নাগরিকদের
প্রতি আমাদের প্রার্থনা রইলো। আমরা
সহায়তা করার জন্য প্রয়োজনীয়
সবকিছু করবো। চীনের
প্রধানমন্ত্রী শি জিনপিং ফরাসি
প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদেকে ফোন করে বলেছেন,
সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে ফ্রান্স
ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে যোগ দিতে
চীন প্রস্তুত। এছাড়াও
তিনি ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের
প্রতি সমবেদনা জানান। চীনের
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকেও নিন্দা
জানানো হয়েছে। মার্কিন
প্রতিরক্ষামন্ত্রী অ্যাশ কার্টার নিন্দা
জানিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ফরাসি
জনগণের পাশে রয়েছে।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, কালো
আর ভয়াবহ এ সময়ে
আমাদের ফরাসি ভাইদের প্রতি
হৃদয়ের অন্তস্তল থেকে সমবেদনা ও
প্রার্থনা রইলো। ফরাসি
সরকারকে তার সরকার সকল
ধরনের সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে বলেও তিনি
জানান। ভারতের
প্রধানমন্ত্রী এক টুইট বার্তায়
নির্মম সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানিয়ে
বলেছেন, ভারত কঠিন এ
সময়ে ফ্রান্সের জনগণের পাশে রয়েছে। সর্বশেষ
খবর অনুযায়ী, শুক্রবার রাতের ভয়াবহ ওই
সিরিজ হামলায় মারা গেছেন
কমপক্ষে ১৫৩ জন।
গতকাল এ রিপোর্ট লেখা
পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন দেশের
প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, বিরোধীদলীয় নেতারা শোক ও
নিন্দা প্রকাশ অব্যাহত রেখেছিলেন।
Comments